০৩:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্যবসায়ী দ্বিখণ্ডিত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় রাঙ্গামাটিতে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ, খুনিদের ফাঁসির দাবি

Md Nazmul

bebshayee-mamun-hotya-rangamati

রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলার সুগারমিল আদর্শগ্রাম এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া পোল্ট্রি ব্যবসায়ী মো. মামুন মাঝির (৩৮) বস্তাবন্দী দ্বিখণ্ডিত লাশের ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয়রা। বুধবার (১৬ জুলাই) সকালে কলমপতি ইউনিয়নের ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডসহ কাউখালী উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়।

বিক্ষোভ মিছিলটি আদর্শগ্রাম থেকে শুরু হয়ে কাউখালী উপজেলা সদরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে নিহত মামুনের বৃদ্ধ পিতা মো. আলী আহম্মদ ও তার শিশুপুত্র সিয়ামও অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তারা মামুন হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রধান আসামি কামরুল হাসান ও তার সহযোগীদের সর্বোচ্চ শাস্তি, অর্থাৎ ফাঁসি নিশ্চিত করার দাবি জানান। বক্তারা বলেন, এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত কার্যকর না হলে এলাকায় সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা চরম হুমকির মুখে পড়বে।

বক্তব্য রাখেন কলমপতি ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রহিম, ৯ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য রেজাউল করিম তালুকদার এবং রাঙামাটি জেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক এম এ বাশার।

ঘটনার পেছনের বর্ণনা
গত ৭ জুলাই দুপুরে ব্যবসায়ী মামুন মাঝি রাউজানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে নিজ বাড়ি থেকে বের হন এবং এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। পরদিন ৮ জুলাই তার স্ত্রী সীমা আক্তার কাউখালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে মামুনের মোবাইল নম্বর থেকে স্ত্রীকে ফোন করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।

পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় লক্ষ্মীপুর জেলার ভবানীগঞ্জ এলাকা থেকে প্রধান আসামি কামরুল হাসানকে গ্রেফতার করে। কামরুলের স্ত্রী রিয়া আক্তার সাথী এবং সহযোগী আনোয়ার হোসেনকেও পুলিশ গ্রেফতার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে যে, ৭ জুলাই সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টার মধ্যে ব্যবসায়ী মামুনকে চেতনানাশক খাইয়ে হত্যা করে এবং পরবর্তীতে মরদেহ দ্বিখণ্ডিত করে রাঙ্গামাটির নাইল্যাছড়ি এলাকার মাঝের পাড়ার একটি পাহাড়ি স্থানে মাটি চাপা দেয়। কামরুল পুলিশকে জানায়, ব্যবসায়িক লেনদেন ও বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডভিত্তিক সিনেমা দেখে তারা এই পরিকল্পনা করে।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের মধ্যে কামরুল হাসান ও তার স্ত্রী রিয়া আক্তার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Md Nazmul

মোঃ নজমুল দৈনিক রেখাচিত্র ওয়েবসাইটে একজন দক্ষ সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে কাজ করছেন। তিনি খবর সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণে বিশেষজ্ঞ। দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতাসহ, তিনি সততা এবং দ্রুততার সঙ্গে সংবাদ পরিবেশন করেন। তার মূল লক্ষ্য পাঠকদের সঠিক ও সময়োপযোগী খবর পৌঁছে দেওয়া।
Update Time : ০২:০৬:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
৬৬১ Time View

ব্যবসায়ী দ্বিখণ্ডিত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় রাঙ্গামাটিতে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ, খুনিদের ফাঁসির দাবি

Update Time : ০২:০৬:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলার সুগারমিল আদর্শগ্রাম এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া পোল্ট্রি ব্যবসায়ী মো. মামুন মাঝির (৩৮) বস্তাবন্দী দ্বিখণ্ডিত লাশের ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয়রা। বুধবার (১৬ জুলাই) সকালে কলমপতি ইউনিয়নের ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডসহ কাউখালী উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়।

বিক্ষোভ মিছিলটি আদর্শগ্রাম থেকে শুরু হয়ে কাউখালী উপজেলা সদরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে নিহত মামুনের বৃদ্ধ পিতা মো. আলী আহম্মদ ও তার শিশুপুত্র সিয়ামও অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তারা মামুন হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রধান আসামি কামরুল হাসান ও তার সহযোগীদের সর্বোচ্চ শাস্তি, অর্থাৎ ফাঁসি নিশ্চিত করার দাবি জানান। বক্তারা বলেন, এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত কার্যকর না হলে এলাকায় সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা চরম হুমকির মুখে পড়বে।

বক্তব্য রাখেন কলমপতি ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রহিম, ৯ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য রেজাউল করিম তালুকদার এবং রাঙামাটি জেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক এম এ বাশার।

ঘটনার পেছনের বর্ণনা
গত ৭ জুলাই দুপুরে ব্যবসায়ী মামুন মাঝি রাউজানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে নিজ বাড়ি থেকে বের হন এবং এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। পরদিন ৮ জুলাই তার স্ত্রী সীমা আক্তার কাউখালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে মামুনের মোবাইল নম্বর থেকে স্ত্রীকে ফোন করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।

পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় লক্ষ্মীপুর জেলার ভবানীগঞ্জ এলাকা থেকে প্রধান আসামি কামরুল হাসানকে গ্রেফতার করে। কামরুলের স্ত্রী রিয়া আক্তার সাথী এবং সহযোগী আনোয়ার হোসেনকেও পুলিশ গ্রেফতার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে যে, ৭ জুলাই সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টার মধ্যে ব্যবসায়ী মামুনকে চেতনানাশক খাইয়ে হত্যা করে এবং পরবর্তীতে মরদেহ দ্বিখণ্ডিত করে রাঙ্গামাটির নাইল্যাছড়ি এলাকার মাঝের পাড়ার একটি পাহাড়ি স্থানে মাটি চাপা দেয়। কামরুল পুলিশকে জানায়, ব্যবসায়িক লেনদেন ও বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডভিত্তিক সিনেমা দেখে তারা এই পরিকল্পনা করে।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের মধ্যে কামরুল হাসান ও তার স্ত্রী রিয়া আক্তার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।